
আদালত প্রতিবেদক: বে-আইনী ভাবে বাপ ছেলেকে আটক রাখার অভিযোগে দেয়া শাস্তি রদ করতে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি,ডিআইজি ও বরিশালের এসপির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুই এ এস আই।
২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার বরিশালের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে ভোলা জেলা ডিবি কার্যালয়ের এ এস আই জুয়েল হোসেন ও বরিশাল মুলাদীর বোয়ালিয়া পুলিশ ফাড়ির এ এস আই মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।
মামলায় স্বরাষ্ট্র সচিব,আইজিপি, ডিআইজি ও বরিশালের এসপিকে প্রতিপক্ষ করা হয়। তারা দুইজনে একই ঘটনায় প্রাপ্ত শাস্তি রোধে প্রায় একই ধরনের অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগকারীদের মধ্যে জুয়েল ২০০৩ সালের ১৪ জুলাই পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগদান করে ২০১১ সালের ২৬ এপ্রিল এ এস আই পদে পদোন্নতি পান এবং কর্মজীবনে মোট ৪৫ টি পুরস্কার পান ও জাহাঙ্গীর ২০০৪ সালের ১৬ জুন পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগদান করে ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর এ এস আই পদে পদোন্নতি পান এবং কর্মজীবনে মোট ৩৯ টি পুরস্কার পান।
অভিযোগে মতে তাদের দেয়া শাস্তির কারন একই। দুইজনেই বানারীপাড়া লবন সাড়া তদন্ত কেন্দ্রে এ এস আই হিসেবে দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ের একটি ঘটনায় পুলিশ কর্তৃপক্ষের শাস্তির শিকার হন।
২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি লবণ সাড়া তদন্ত কেন্দ্রে উপজেলার মধ্য ইলুহার এলাকার আব্দুল খালেক বেপারী ও তার ছেলে মহিবুল্লাহকে বে আইনী ভাবে আটক করে ওই দিন রাত এগারোটা পঞ্চাশ মিনিট থেকে পর দিন এগারোটা পয়ত্রিশ মিনিট পর্যন্ত হাজতখানায় রাখেন। বিষয়টি তদন্ত কেন্দ্রের জিডিতে কিংবা হাজতখানার রেজিস্ট্রারে অন্তভূক্ত করা হয়নি।
এব্যাপারে অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ কর্তৃপক্ষ হতে তাদের পিআরবি রুলস অনুযায়ী চাকরী থেকে বরখাস্ত/অপসারন কিংবা অন্য প্রকার গুরুদন্ড কেন প্রদান করা হবে না তার সন্তোষজনক লিখিত জবাব প্রদানের জন্য ৭ কার্য দিবসের মধ্যে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
তারা নোটিশ পেয়ে লিখিত ও ব্যক্তিগত শুনানীতে হাজির হয়ে মৌখিক বক্তব্য প্রদান করেন । বরিশাল পুলিশ সুপার ব্যক্তিগত শুনানী গ্রহন করেন। পুলিশ সুপার তাদের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে সন্তোষ্ট না হয়ে তাদের বিরুদ্ধে স্মারক আদেশে অভিযোগ গঠন করেন।
তারা যথারীতি অভিযোগনামার জবাব দাখিল করেন।পুলিশ সুপার তাতে সন্তোষ্ট না হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (১৮/২০১৯) ও (১৯/২০১৯) দায়ের করেন। এছাড়া পুলিশ সুপার ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বাকেরগঞ্জ সার্কেল) আনোয়ার সাইদকে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাইদ ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষী গ্রহণ করে সাক্ষ্য প্রমানে প্রমানিত না হওয়ার পরও জুয়েল হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তি স্বরুপ গুরুদন্ড হিসাবে একটি ব্লাক মার্ক শাস্তির সুপারিশ করে ফাইডিংন্স এবং জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একটি বার্ষিক বর্ধিত বেতন আগামী প্রাপ্যতার তারিখ থেকে ৩ বছরের জন্য স্থগিত করার সুপারিশ করে ফাইডিংন্স প্রদান করেন।
বরিশালের পুলিশ সুপার (এস পি) তাদের হোসেনের ব্যক্তিগত শুনানী গ্রহন করে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার সুপারিশ অনুযায়ী চুড়ান্ত দন্ডাদেশ দেন। এতে তারা উভয়েই পৃথক ভাবে বরিশাল রেঞ্জের উপ মহা পুলিশ পরির্দশকের (ডিআইজি) কাছে আপীল করেন। ডি আইজি তাদের আপীল নামঞ্জুর করেন।
তাদের প্রতি পুলিশ কর্তৃপক্ষের দেয়া শাস্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে ট্রাইব্যুনালে পৃথকভাবে মামলা দুটি দায়ের করলে বিচারক অরুনাভ চক্রবর্তী মামলার গ্রহণ যোগ্যতা শুনানির জন্য আগামী ২৯ নভেম্বর দিন ধার্য্য করেন বলে আদালত সূত্র নিশ্চিত করেন।